সিজোফ্রেনিয়া কি?

 🌿🌿

শরীরের ভিতরে-বাইরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গে যেমন অসুখ হয়। তেমনিভাবে মনেরও অসুখ হয়। আর এ অসুখ মানুষের জীবনকে সবচেয়ে বেশি অসুখী করে তুলতে পারে।

কিছু কিছু পরিসংখ্যানে জানা গেছে, সারা বিশ্বে প্রতি ১০ জনে একজন "নিউরোসিস" বা হাল্কা মাত্রার মানসিক রোগ এবং প্রতি ১০০ জনে একজন "সাইকোসিস" বা বড় মাপের মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। আর মানসিক গুণ হিসেবে এ রোগের অস্তিত্ব যেকোনো সচেতন মানুষের মনে ধরা দেয়। তবে কোন অবস্থায় চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে সে বিষয়গুলো জানা থাকা জরুরি।

💦 সিজোফ্রেনিয়া:
জটিল এবং ভীষন কষ্টদায়ক মানসিক রোগ। রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায় ২০-৪০ বছর বয়সের যে কোনো সময়ে।

রোগের লক্ষণ:
রোগী অহেতুক সবকিছুকেই সন্দেহের চোখে দেখে যা পরিবারের নজরে সবার আগে আসে। এমন রোগীর মনে করে যে কেউ তাকে খেয়াল করছে, কেউ চুপি চুপি তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে বা কেউ তার খাবারে বিষ মিশিয়ে দিচ্ছে। রোগী একপর্যায়ে ঘর ছেড়ে বাইর বের হয় না। খাওয়া দাওয়া বন্ধ করে দেয়। তাই এ জাতীয় কোনো লক্ষণ মনে আসলে বা কোরো মাঝে দেখা দিলে অবশ্যই সাইকোলজিস্টের কাছে যেতে হবে।

এসব রোগীর মাঝে নানা ধরনের অসংলগ্ন আচরণ দেখা যায়। যেমন, অপরিচ্ছন্ন ভাবে চলাফেরা করা। তাড়া না দিলে গোসল না করা, একই জামা কাপড়ে সপ্তাহ পার করে দেয়া এমনকি তা ছিঁড়ে না যাওয়া পর্যন্ত পড়ে থাকা। রাস্তা থেকে কুঁড়িয়ে পাওয়া কাগজ যত্ন সহকারে জমা রাখা, কেউ কেউ আবার হাতের রেখা বা তাবিজ কবজ নিয়ে ভাবতে শুরু করেন।

ব্যক্তিত্বের পরিবর্তনে কোনো পরিশ্রমী মানুষ হঠাৎ করে অলস হয়ে পড়ে, উদ্দেশ্যহীনভাবে চলাফেরা শুরু করে। আর এসব সিজোফ্রেনিয়া রোগের লক্ষণ। এসব লক্ষণ কারো মাঝে দেখা দিলে বুঝতে হবে তিনি মানসিক রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।



💦মরবিড জেলাসী বা অথেলো সিনড্রোম:
এটা হচ্ছে সন্দেহ বা বদ্ধমূল বিশ্বাস। পর পুরুষে আসক্ত ভেবে তারা স্ত্রীদের কঠোর অনুশাসনে রাখেন, মারধর ও গালিগালাজ করেন। বাহিরে গেলে স্ত্রীকে চোখে চোখে রাখেন। স্ত্রী শিক্ষিত হলে তার চাকরিতে যাওয়া বন্ধ করে দেন।

লক্ষণ:
মানসিক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির মনের মাঝে নানা কুচিন্তা ভর করে। এমন কাউকে নিয়ে অনৈতিক চিন্তা করা হচ্ছে যা অত্যন্ত গর্হিত। যা ওই ব্যক্তি বুঝতে পারেন তারপরও বারবার এমন চিন্তা তার মাথায় আসে। ব্রেনের কিছু নিউরোট্রান্সমিটারের ত্রুটির কারণে মাথায় এমন উদ্ভট কাজ করে।

💦ওসিডি:
বার বার হাত ধোয়া। বার বার গোসল করা। খেতে বসে প্লেট বার বার ধোয়া। শুতে গিয়ে দরজার ছিটকিনি বার বার দেখতে উঠা সবই ওসিডি। চিকিৎসা ছাড়া সেরে উঠা অসম্ভব। দ্রুত মনোচিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

💦মনের মাঝে হতাশা-নিরাশা-আনন্দহীনতা কাজ করে। বন্ধুদের সহচার্য এড়িয়ে চলে একা থাকতে পছন্দ করে। আমাদের চারপাশে প্রতি ১০ জনে এমন একজন খুঁজে পাওয়া যাবে।

লক্ষণ:
মন খারাপ আবার মুর্হূতেই মন ভালো। আবার মুহূর্তেই মন খারাপ। ভয়ঙ্কর মানসিক রোগ। লক্ষণ প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই চিকিৎসকের শরনাপন্ন হতে হবে।

💦সোমাটাইজেশন:
শরীর জ্বালাপোড়া দীর্ঘমেয়াদী ব্যথা থাকে যা চিকিৎসায় সারে না। আসলে এ লক্ষণ সোমাটাইজেশন বা মানসিক সমস্যার শারীরিক বহির্প্রকাশ। এমতাবস্থায় রোগীর সাইকোলজিস্টের পরামর্শ নিতে হবে।

💦হিস্টিরিয়া:
হিস্টিরিয়ায় আক্রান্ত রোগী নিজের অজান্তে অসুস্থতার ভান করে। যেকোনো ধরনের পারিবারিক বা ব্যক্তিগত সমস্যার সমাধান খুঁজতে তারা এমনটা করে। এটা মেয়েদের বেলাতেই বেশি দেখা যায়। সাইকোথেরাপির সাহায্যে সম্পূর্ণ মুক্তি সম্ভব।

উপরোক্ত মানসিক সমস্যা গুলোর মধ্যে কিছু ক্ষেত্রে cognitive behavioral therapy, আবার কিছু ক্ষেত্রে psychotherapy র প্রয়োজন, যা মনোচিকিৎসক সমস্যার উপর ভিত্তি করে দিয়ে থাকেন।

#mindplus

No comments

Theme images by rami_ba. Powered by Blogger.